
ভারত সরকার প্রতিবেশী দেশগুলোতে অমুসলিম সংখ্যালঘুরা নিপীড়নের শিকার হচ্ছে বলে দাবী করে পার্শ্ববর্তী তিনটি দেশ বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান থেকে হিন্দু, শিখ, বৌদ্ধ, জৈন, পার্সি ও খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের যারা অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশ করেছেন, তাদের নাগরিকত্ব দেয়ার জন্য যে আইন পাশ করেছে তা মূলত মুসলমানদের একঘরে করে ভারতকে হিন্দুকরণ করার ঘৃণ্য প্রয়াস।
গত ১৯ ডিসেম্বর সন্ধ্যা ৭টায় গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ এর আমীর, দারুল উলূম হাটহাজারী মাদরাসার মহাপরিচালক অাল্লামা অাহমদ শফী একথা বলেন।
আল্লামা আহমদ শফী বলেন, মোদি সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে মুসলমানদের উপর যেভাবে জুলুম নির্যাতন চালাচ্ছে তা পরিস্কার রাষ্ট্রীয় নীতি ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের শামিল।মোদী সরকারের বিরুদ্ধে মুসলমানদের পাশাাপাশি যেভাবে সাধারণ জনগণ ফুঁসে উঠেছে তা বিজেপি সরকারের প্রতি চরম অনাস্থা ও ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ। ভারতের মুসলমান প্রচণ্ড ধৈর্যশীল। তবে একথা ভুলে গেলে চলবে না, মুসলমান ধৈর্যশীল তবে ভীরু নয়। মুসলমানগণ প্রতিরোধ গড়ে তুললে মোদির মসনদ তছনছ হয়ে যাবে।
আমীরে হেফাজত অারো বলেন, ভারতের দীর্ঘ ইতিহাস, ঐতিহ্য ও অবদানে মুসলমানদের নাম মিশে অাছে। ভারতের ঐতিহাসিক প্রায় স্থাপত্য মুসলমানদের তৈরি। চাইলেই এসব মুছে দেয়া যায় না। ভারতীয় মুসলমানদের কাছে পুরো বিশ্ব ঋণী। বিজেপিসহ কট্টরপন্থী হিন্দু সংগঠনগুলো মুসলিম সম্প্রদায়ের উপর ধারাবাহিক যে নির্যাতন নিপীড়ন চালাচ্ছে তা করে ভারতকে মুসলিমশূন্য করা যাবে না। বরং এসব নির্যাতন নিপীড়ন মোদি ও হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলোর পতন ডেকে অানবে। অাল্লামা অাহমদ শফী অারো বলেন, কট্টর হিন্দুত্ববাদী সংগঠন বিজেপি নেতা নরেন্দ্র মোদি ক্ষমতা গ্রহণ করার পর থেকে ভারতীয় মুসলমানগণ চরম নিরাপত্তাহীনতায় দিনাতিপাত করছে। ভারতকে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ও সাম্প্রদায়িক সহবস্থানের দেশ দাবী করলেও শুধু মুসলিম হবার অপরাধে নৃশংসভাবে পিটিয়ে হত্যা করা হচ্ছে।
কাশ্মীরের মুসলমানদের হত্যা করা হচ্ছে, মা বোন ধর্ষণ করা হচ্ছে। মোদি সরকারের একথা জেনে রাখা উচিৎ, জুলুম-নির্যাতন করে মুসলমানদের নিশ্চিহ্ন করা যাবে না। অামীরে হেফাজত অারো বলেন, ইসলাম সবসময় মানবাধিকারের কথা বলে। শান্তি ও নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠার কথা বলে।অমুসলিম সম্প্রদায়কে নিরাপত্তা দানের কথা বলে। অার বাংলাদেশি মুসলমানগণ বারবার তা প্রমাণ করে দেখিয়েছে। মানবপ্রাচীর তৈরি করে মন্দির পাহারা দেয়ার নজীর অামরা দেখিয়েছি। বাংলাদেশে সংখ্যালঘুরা সবচেয়ে বেশি সুযোগ-সুবিধা ভোগ করে বসবাস করছে। অথচ ভারতে এর উল্টো চিত্র অামরা দেখতে পাচ্ছি। ভারতের সংখ্যালঘু মুসলিম সম্প্রদায় সবসময় সংখ্যাগরিষ্ট হিন্দু সম্প্রদায় কর্তৃক নির্যাতিত নিপীড়িত হচ্ছে। ভারতের উচিৎ হবে নিজেদের দেশের সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা ও নাগরিক অধিকার নিয়ে কাজ করা।
